Friday, 29 September 2017

Ancient civilization (প্রাচীন সভ্যতা)

  কোটি কোটি বছর ধরে প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবীতে নানা প্রাণীর জন্ম হয়েছে। প্রকৃতির এই ধীর পরিবর্তনের ধারাকে বলে বিবর্তন। ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন তাঁর বিখ্যাত অরিজিন অব স্পিসিজ গ্রন্থে দেখালেন বিবর্তনের ধারা। বিজ্ঞানীরা এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার নানা স্থানে আদিম মানবের মাথার খুলি, কঙ্কাল ইত্যাদির অংশবিশেষ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণার ফলে জানা গেছে শিম্পাঞ্জী, গরিলা জাতীয় নরাকার প্রানীর পরে, আজ থেকে প্রায় কয়েক লক্ষ বছর আগে আদিম মানুষ পৃথিবীতে জন্মায়। শিম্পাঞ্জী, গরিলা জাতীয় নরাকার প্রাণীর নাম এপ। এপ হল উচ্চশ্রেণীর বাঁদর। ভারতেও দিল্লীর উত্তরে শিবালিক পর্বতে এপ মানুষের জমে থাকা হাড় পাওয়া গেছে। আদিম মানবের আকৃতি অনুযায়ী নৃবিজ্ঞানীরা তাঁদের প্রাচীনত্ব নির্ণয় করেছেন ও ভিন্ন ভিন্ন নাম করণ করেছেন। যেমন- সিনানথ্রপাস (পিকিং মানব), পিথেকানথ্রপাস (জাভা মানব), এরা একই যুগে বাস করতো; কিন্তু একই প্রজাতির নয়। তাছাড়া ছিল, নিয়ানডারথাল ও হাইডেলবার্গ (জার্মানী) এবং ক্রোম্যাগনান মানুষ (ফ্রান্স)।





আদিম মানুষ ছিল দলবদ্ধ বা যূথবদ্ধ। আদিম মানুষের প্রথম বাসস্থান ছিল অন্ধকার ও স্যাঁতস্যাঁতে গুহা। আদিম মানুষ আগুনের ব্যবহার জানত। তারা পাথরের টুকরোকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতো। এপ ও মানুষের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল মানুষ হাতিয়ার তৈরি কতে পারতো, এপরা তা পারতো না। 1889 খ্রিস্টাব্দে এশিয়ার জাভা দ্বীপে আদিম মানবের হাড়, দাঁত ও জীবজন্তুর কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া গেছে। 1929 খ্রিস্টাব্দে চীনের পিকিং (বর্তমানে বেজিং) নগরীর কাছে চৌকোতিয়েন শহরে এক চূনা পাহাড়ের এক গুহায় আদিম মানবের প্রথম খুলিটি খুঁজে পান চীনা নৃ-বিজ্ঞানী পেই ওয়েন চূং। এরা পিকিং মানব নামে পরিচিত। আফ্রিকার আদিম মানুষের নামকরণ হয়েছে হোমো ইরেকটাস অর্থাৎ খাড়া মেরুদণ্ডী মানুষ। বিজ্ঞানীরা মনে করেন ১৭ লক্ষ ৫০ বছর আগে বেঁচেছিল। হোমো সাপিয়েন্স বা প্রথম আধুনিক মানুষের আবির্ভাব হয় ৩০-৪০ হাজার বছর আগে।
 ★প্যালিওলিথিক বা প্রাচীন প্রস্তর যুগ (Paleolithic or Old Stone Age)
মানুষ এইসময় Hunter ছিল এবং খাদ্য সংগ্রহ করত। পাথরের তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করত এবং শেষদিকে আগুনের ব্যবহার শেখে। এই শেষ দিকে পৃথিবীতে এলো তীব্র শীত। একে বলে তুষার যুগ।


★মেসোলিথিক বা মধ্য প্রস্তর যুগ (Mesolithic or Late Stone age)

এই সময়ে মানুষ পাথর ও হাড়ের তৈরি তীক্ষ্ণ ও উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করত যেমন Borer. এই সময় মানুষ পশুপালন করতে শেখে (কৃষির জন্য)।


★নিওলিথিক বা নব্যপ্রস্তর যুগ (Neolithic or New stone age)


খাদ্য সংগ্রাহক থেকে মানুষ হয়ে উঠল খাদ্য উৎপাদক। গম ও যবের চাষ সব চেয়ে প্রাচীন। ধান চাষও তারা জানত বলে অনেকে মনে করে। পশ্চিম এশিয়ার ইরাক, ইরান, সিরিয়া প্যালেস্টাইন প্রভৃতি জায়গায় সর্বপ্রথম এসবের ফলন শুরু হয়। খুব তীক্ষ্ণ অস্ত্র ব্যবহার করত যেমন- burins, blades ইত্যাদি। দু-তিনটি মোটা কাঠের গুঁড়ি বেঁধে ভেলা তৈরি করতেও শিখেছে। নব্যপ্রস্তর যুগের সব থেকে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার চাকা। মাটির পাত্র তৈরির জন্যই প্রথমে মৃৎশিল্পীরা কুমোরের চাকা তৈরি করেন। এই সময় গড়ে ওঠে গোত্র ভিত্তিক গোষ্ঠী। যূথবদ্ধ মানুষ অপেক্ষা গোত্র ছিল অনেক সংগঠিত। একই জায়গায় বসতি গড়তো যেসব গোত্র তাঁদের নিয়ে গঠিত হত কৌম। Mehrgarh is the earliest Neolithic Site in India.

★ক্যালকোলিথিক বা ধাতব যুগ (Chalcolithic or Metal age)

ধাতু হিসাবে মানুষের প্রথম আবিষ্কার হল তামা (First Metal which discovered by man was Copper)। সম্ভবত সুমেরের মানুষই তামা ব্যবহার করতে শেখে। এইসময় মানুষ তামা ও টিন মিশিয়ে ব্রোঞ্জ আবিষ্কার করে। তাই এই সময়কালকে তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগ বলা হয়। এই যুগেই নদীমাতৃক সভ্যতা টাইগ্রিস নদীর তীরে মেসোপটেমিয়া সভ্যতা, নীল নদের তীরে মিশরের সভ্যতা, সিন্ধু নদীর তীরে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। চাষবাস ছাড়াও পশুপালন ছিল প্রধান জীবিকা।

No comments:

Post a Comment