বন্ধুরা ভারত আর চিন দুই এশিয়োইঙ্গিনের লড়াই দীর্ঘদিনের। মানে ড্রগণ বনাম হাতির লড়াই। প্রথমে হিন্দি চিনি ভাই ভাই স্লোগান। তার পর '62_র যুদ্ধ। যুদ্ধে কয়েকটা ভুল সিধান্ত ভারত কে ডুবিয়েছিল। সেই 62_র কথা এখন থাক। 2013 এখন। এখনকার কথা ভাবা যাক।
সম্প্রতি গত ১৫ এপ্রিল,২০১৩ রাতে আচমকাই চিনা সেনাবাহিনীর ৫০জন জওয়ান নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি সেক্টরে ভারতীয় ভূখণ্ডের ১৯ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়ে। পাঁচটি তাবু পেতে সেখানেই বসে পড়ে তারা। পরে জানা যায়, সেই রাতে সেনাদের সাহায্যের জন্য ২টি চিনা হেলিকপ্টারও ভারতের আকাশসীমায় ঢুকেছিল। ভারতের লাদাখের দৌলত বেগ সেক্টরে চিনা সামরিক ঘাঁটিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে ছড়ায়।
তৎক্ষণাৎ ভারতীয় সেনাবাহিনী পিএলএ-এর তাঁবুর ঠিক উল্টো দিকে ৩০০ মিটারের মধ্যে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করে। চিনা সামরিক ঘাঁটির সামনে ঘাঁটি বানিয়ে পজিসেন নেয়। এরই পাশাপাশি, চিনা কর্তৃপক্ষকে 'শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান' বজায় রাখার অনুরোধ জানান ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সইদ আকবরুদ্দিন। তাঁর কথায়,'অনুপ্রবেশের আগের অবস্থানে ফিরে আসার জন্য আমরা চিনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি।'
ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা সেনা পূর্ব অবস্থানে না ফেরায় প্রথম ১০ দিনেই লাদাখের দৌলত বেগ সেক্টরে তিনটি ফ্ল্যাগ মিটিং হয়ে গিয়েছে। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বসেছিলেন ভারত ও চিনা সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার স্তরের কমান্ডাররা। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আলোচনাও হয়। কিন্তু ততদিনেও ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে নড়ার নাম করেনি চিনা সেনা। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে একমত ছিল না ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনার একটা বড় অংশ চেয়েছিল, চিনের এই কাণ্ডের ‘যোগ্য জবাব’ দেওয়া হোক।
চীন ও ভারতের মধ্যে বিশাল অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। তবে এই লাদাখ ও হিমাচল এলাকা নিয়েই ১৯৬২ সালে দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল।
সীমান্তে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ নিয়ে চূড়ান্ত উত্তেজনার মধ্যে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদকে বেজিং পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মনমোহন সিংহ সরকার। গত ৯ মে তাঁর চিন সফরে ছিল। তিনি সফরে যানও। আর তারপর ভারতে আসছেন চীনা প্রধানমন্ত্রী৷ সীমান্ত সমস্যা যাতে আরও জটিল না হয়ে ওঠে, সে জন্যই কূটনৈতিক আলোচনায় সমাধানের পথ খুঁজছে ভারত। বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিতে দু’দেশেরই স্বার্থ জড়িত। বিভিন্ন বিষয়ে দু’দেশের মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু এত বছর ধরে সম্পর্কের যে বুনিয়াদ তৈরি হয়েছে তা নষ্ট হওয়া ঠিক নয়।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই ধরণের বৈরি কার্যকলাপ নতুন নয়। তা সে অরুণাচলপ্রদেশ হোক, স্টেপল ভিসা ইস্যু হোক বা ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর চীনের তিনটি বাঁধ নির্মাণ হোক বা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবি হোক। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় পরাশক্তি হিসেবে চীনের আধিপত্য বিস্তার করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। তাই এবার যে কোনো মূল্যে ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন,'শুধু এই ঘটনার জন্য ভারত-চিন সম্পর্কের উন্নতিকে প্রশ্ন করা ঠিক নয়। জাতির স্বার্থে আমরা যথাসাধ্য করার চেষ্টা করছি৷' ঘটনার কড়া সমালোচনা করে বিজেপি নেতা মুরলি মনোহর যোশী দাবি করেন,'চিনের সামনে কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বলের মতো আচরণ করছে। এটাই প্রমাণ করে প্রতিরক্ষা ও বিদেশ নীতিতে খামতি রয়েছে।' সমাজবাদী পার্টির তরফেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দলের সুপ্রিমো মুলায়ম সিং যাদবের কথায়,'অন্য সব কিছু পরে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল চিনা সমস্যার বিষয়টি।'
বিশ্লেষকদের ধারণা, হালে ডারবানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের নতুন প্রেসিডেন্টের মধ্যে দু'দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা নিয়ে ইতিবাচক মত বিনিময় হয়। তাতে বলা হয়, সীমান্ত বিরোধ যেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর ছায়া না ফেলে। মনে রাখতে হবে, দু'দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে যা গেছে চীনের অনুকূলে, বলেছেন চীনা স্টাডি সার্কেলের এক কর্তা ব্যক্তি।
চীনা অনুপ্রবেশের পেছনের কারণ হতে পারে সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই করার জন্য ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। ভারতে প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির মতে, এতে চীন প্রভাব প্রতিপত্তি আরো বাড়বে এবং অনুপ্রবেশও হবে। এই চুক্তিতে ভারতের লাভ হবে না। চুক্তিটা হল কখন লাদাখে ভারতীয় সেনা প্রেট্রলিং দেবে, সেটা আগেথেকে চিনাসেনা বাহিনীকে জানাতে হবে। উল্টো দিকে চিনও ভারতকে টহলদারির ব্যাপারে জানাবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, ভারত নিজের এলাকাতে টহল দেবে, না নজরদারি চালাবে, না পরিকাঠামো উন্নতি করবে সেটা অন্য দেশকে জানিয়ে করেবে কেন ? আমার দেশ ভালো-মন্দ যা করার আমি ঠিক করবো, তুমি কে আমাদের অভ্যন্তরিন ব্যাপারে নাক গলানোর ? আগে তিব্বতের নিরীহ মানুষ গুলোর উপর দমন-পীড়ন এক কথাই অসহ্য অত্যাচার অবিলম্বে বন্ধ করে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দিন। আকশায় চিনে পরিকাঠামো উন্নয়ন বন্ধ করুন।
অবশেষে ৯ মে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে যে অনুপ্রবেশে করেছিল চিনা সেনা বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের চিন যাত্রার ঠিক আগে কিছুটা আচমকাই তিন সপ্তাহ পর লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি সেক্টরের বিতর্কিত জায়গা থেকে সেনা সরিয়ে নেই চিন।
তবে চিনা সেনা কিছু দাবি জানায় ভারতকে। পূর্ব লাদাখের চুমার এলাকায় তৈরি হওয়া ভারতের সেনাঘাঁটি বন্ধ করতে হবে, কারণ এই সেনা ঘাঁটি থেকে সরাসরি চিনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, বিশেষত ওয়েস্টার্ন হাইওয়ের উপর নজরদারি করা সম্ভব। এ ছাড়াও দৌলত বেগ, ওল্ডি ফুচকে, নায়োমা ইত্যাদি জায়গায় গত কয়েক বছর ধরে ভারত যে সব সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করেছে, সেগুলিও বন্ধের দাবি জানায় চিন। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, চিনের দাবি পুরোপুরি না মানলেও আপাতত আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে পরিকাঠামো তৈরি ও উন্নয়নের কাজ বন্ধ রাখার কথা বিবেচনা করা হবে। তবে সরকারেরই অন্য একটি সূত্রের বক্তব্য, চিনা সেনা সরানোর পরে এ বার ওই এলাকায়, বিশেষত চুমারে সামরিক পরিকাঠামো গড়ার কাজে গতি বাড়াবে ভারত।
ওই সব অঞ্চলে ভারতীয় সেনার সংখ্যা এবং নজরদারি বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে দিল্লির। অবশ্য একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, পুরো বিষয়টিই আলোচনা সাপেক্ষ এবং খুরশিদের চিন সফর ও লে কেকিয়াং-এর ভারত সফরে এ নিয়ে আলোচনা হবে।
চীনের আরও দাবি, সীমান্তের অগ্রবর্তী স্থানে ভারতীয় বাংকার ভেঙে ফেলতে হবে এবং ঐ এলাকায় ভারতের অ্যাডভান্স ল্যান্ডিং সুবিধা নিষ্ক্রিয় রাখতে হবে। অর্থাৎ ৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের পর থেকে লাদাখ অঞ্চলে চীন-ভারত সীমান্তে যে স্থিতাবস্থা ছিল, তা থেকে সরে আসা। অথচ চীন ঐ অঞ্চলে যাতে দ্রুত সেনা মোতায়েন করতে পারে, তার যাবতীয় অবকাঠামো সুষ্ঠুভাবে তৈরি করে গেছে চীন। কিন্তু ভারতের দিকে অনুরূপ অবকাঠামো নির্মাণ স্থগিত রাখার চীনা শর্ত যদি ভারত মানে, তাহলে সেটাই হবে চীনা সেনা প্রত্যাহারে ভারতের মূল্য?
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “পারস্পরিক বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতার রাস্তায় হাঁটাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।”
তবে সেনা সরানো এবং শীর্ষ বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি শুরু করার পাশাপাশি পারস্পরিক চাপের কূটনীতিতে চিন এবং ভারত দু’পক্ষই সমান সক্রিয়। সেনকাকু দ্বীপ নিয়ে চিন এবং জাপানের মধ্যে সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে জানিয়েছেন, এই দ্বীপটি জাপানেরই সম্পত্তি এবং সেখানে চিন ঘাঁটি গাড়তে গেলে সামরিক ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে মনমোহনের টোকিও সফর বেজিংকে কিছুটা চাপে রাখবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
------------------------------+++++++++++---------------------------------
চিনা সীমান্তে আরও ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। এই নতুন বাহিনীর নাম মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর। সদর দফতর পানাগড়ে। 16 জুন 2013, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনকে মোকাবেলায় ভারতের সামরিক প্রস্তুতি হিসাবে চীন সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়াতে ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর্পস’(পর্বত এলাকায় যুদ্ধ করতে সক্ষম বাহিনী) নামে বিশেষ বাহিনী গঠন করছে ভারত। চীন নিয়ন্ত্রিত তিব্বত সীমান্ত এলাকা দিয়ে সম্ভাব্য যে কোনো ধরণের চীনা আক্রমণ ঠেকাতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে চীনের গবেষকরা সীমান্তে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে চীন সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন। একথা জানিয়েছে চীনের ইংরেজি ভাষার পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে চীনা ওই পত্রিকাটি জানায়, ভারত সরকার তাদের ২০১২-২০১৭ পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ৪০ হাজার সৈনিকের সমন্বয়ে এই বাহিনী গঠন করবে।
গত ১৫ জানুয়ারি পত্রিকাটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, ভারতের সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর প্রধানদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটিতে এই বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। আর এখন তা শুধু প্রতিরক্ষা বিষয়ক কেবিনেট কমিটিতে অনুমোদিত হলেই হলো। ভারত ইতিমধ্যে চীন সীমান্তে দুই ব্রিগেড পদাতিক সেনা এবং দুই ব্রিগেড সামরিক ট্যাংক সজ্জ্বিত বাহিনী প্রেরণ করেছে।
এদিকে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্তের পর চীন-ভারত সীমান্তের 3380 কি.মি. এলাকায় সেনা বাড়ানোর জন্য চীন সরকারকে পরামর্শ দিয়ে চীনের ইনস্টিটিউট অব কনটেমপরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স-এর গবেষক ফু ঝিয়াওকিয়াং বলেন,‘ ভারতের সাথে লাগোয়া সীমান্তে চীনের পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ আরো জোরদার করা উচিত।’ ফু আরো বলেন, এই বিশেষ বাহিনী গঠনের বিষয়টি দিয়ে বোঝা যাচ্ছে ভারত চীনকে তার প্রধান সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছে।
গ্লোবাল টাইমসকে ফু বলেন, গত ডিসেম্বরে তিব্বতে পরিচালিত চীনা বিমান বাহিনীর সামরিক অনুশীলনের সাথে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এই ধরণের সিদ্ধান্তের সম্পর্ক খুবই কম। কিন্তু, এই সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টি ভারতের সামগ্রিক পরিকল্পনারই একটি অংশ। প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত ব্যাপকভাবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, মনুষ্যবিহীন এয়ারক্রাপ্ট এবং হেলিকপ্টারের সংখ্যা বাড়াচ্ছে।
চীন কোনো দেশের সাথে দ্বন্দ্বে জড়াবে না উল্লেখ করে ফু বলেন,‘এই এলাকায় সম্ভাব্য দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করার জন্য চীনের সক্ষমতা রয়েছে।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনার আওতায় ৬টি আর্মার্ড রেজিমেন্ট মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আর এতে থাকবে 350 টি ট্যাংক। এছাড়া তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন তারা গঠন করবে, যাদের থাকবে ১৮০ বিএমপি-১১ সাঁজোয়া যানবাহন। লাদাককেন্দ্রিক সেনা সংখ্যাও বাড়ানো হবে। এছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনী জঙ্গী বিমান সংখ্যাও বাড়াবে এই অঞ্চলে।
ভারত 2009-10 সালেই আসামের লেখাপানি ও মিসামারিতে দুটি নতুন পদাতিক ডিভিশন গড়ে তুলেছে। এই ডিভিশন দুটি অরুনাচল প্রদেশকে রক্ষার কাজ করতে সক্ষম।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, ভারত গত দশক থেকে চীনের সামরিক ও অবকাঠামোগত সামর্থ্যের সঙ্গে তাল মেলানোর কার্যক্রম হাতে নিলেও সেটা বাস্তবায়নের জন্য সত্যিকার অর্থেই এখন তাড়াহুড়া করছে। সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পার্বত্য স্টাইক কোর হবে চীনের সামর্থ্যর কাছাকাছি পৌঁছার একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।
ভারত চীন-সীমান্তে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক সামর্থ্য ও উন্নত অবকাঠামোর সঙ্গে তাল মেলাতে ভারত সীমান্ত এলাকায় তার ক্ষেপণাস্ত্র ও জঙ্গি বিমান সামর্থ্য বাড়াচ্ছে। ভারতের প্রথম পার্বত্য স্টাইক কোর গঠনের প্রস্তাবটি কয়েক বছর ধরেই ঝুলে ছিল। বিপুল অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় অতীতে ফাইলটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিত। কিন্তু পরিস্থিতি এখন পাল্টে গেছে, এখন দ্রুততার সাথে গঠনকরাই এর লক্ষ্য।
সিপরি’র গবেষণা পত্রে দেখা যায়, ২০১২ সালে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি অস্ত্র আমদানিকারক দেশের তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে ভারত এবং তারা আমদানি করেছে বিশ্ব বাজারের 12% অস্ত্র। চীন কিনেছে 6% এবং পাকিস্তান 5%। 2003-2007 এর তুলনায় 2008-2012 সময়কালে ভারতের অস্ত্র আমদানি বেড়েছে শতকরা 59 শতাংশ। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দও বাড়িয়েছে।
2013 সালে ঘোষিত বাজেটে দেখা যায়, প্রতিরক্ষা খাতে তাদের ব্যয় বেড়েছে 5.31% , যার শতকরা 42 ভাগ ব্যবহৃত হয়েছে অস্ত্র ও সমরসরঞ্জামাদি আমদানি এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের জন্য।ভারত 2012 সালে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করেছে 46.8 বিলিয়ন ডলার (1 বিলিয়ন = 100 কোটি); যদিও 2012 সালে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় 0.8 শতাংশ কমেছিল। এই ব্যয় আবার বেড়েছে।
---------------------------------------------||||||||||||||||||||||||||||||||-------------------------------------------
চিনের মোকাবিলায় ইরানের বন্দর উন্নয়নের সিদ্ধান্ত ভারতের
যখন লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে চিন-ভারত সম্পর্কে, তখনই কৌশলগত দিক থেকে কিছুটা সাফল্যের মুখ দেখে নয়াদিল্লি।
ইরানের ছাবাহার বন্দর উন্নয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। আজ এই সিদ্ধান্তের কথা তেহরানে ইরান সরকারকে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ। এশিয়ায় চিনা প্রভাব বিস্তার রুখতেই ভারত এই পদক্ষেপ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ১৯ কিমি ঢুকে এসেছে চিনা সেনা। এখনও ফেরার লক্ষণ নেই তাদের। ফলে, প্রস্তাবিত চিন সফরে খুরশিদ যাবেন কি না তা অনিশ্চিত। তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক উত্তাপ। কেবল লাদাখের অনুপ্রবেশ নয়, এশিয়ায় চিন ধীরে ধীরে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে বলে মত অনেকেরই। ছাবাহারের কাছেই পাকিস্তানের গদর বন্দর উন্নয়নের দায়িত্বে চিন। গদর থেকে পাকিস্তান ছাড়া আফগানিস্তানের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পায় চিনারা। পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে পণ্য পরিবহণের অনুমতি নেই ভারতের। ফলে, আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা বিপাকে পড়েছিল ভারত। এগিয়ে গিয়েছিল বেজিং।
ছাবাহার বন্দরের দিকে তাই দীর্ঘদিন ধরেই নজর ছিল দিল্লির। এই বন্দর থেকে পাকিস্তানের উপরে নির্ভর না করেই আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব। অবশেষে সেই বন্দর উন্নয়নে ভারতের অংশগ্রহণ এশিয়ার এই অঞ্চলে ভারতকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে দিল।
ছাবাহারে ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে ভারত। ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যও বাড়াতে চায় দিল্লি। তবে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমেরিকার বাধার মুখে পড়তে হবে ভারতকে। ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ফয়সালার আগে ইরানের সঙ্গে অন্য কোনও দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বরদাস্ত করতে রাজি নয় ওয়াশিংটন।
নয়াদিল্লিতে ইজরায়েলি কূটনীতিকের গাড়িতে হামলায় ইরানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল আমেরিকা-ইজরায়েল। তখন ভারতকে ইরান থেকে তেল কেনা কমাতে চাপ দিয়েছিল আমেরিকা। তবে ভারত নিজের স্বার্থেই ইরান ও আমেরিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে চায় বলে কূটনৈতিক সূত্রে খবর।আর তাই ইরানের পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ করতে রাজি নয়াদিল্লি।
ভারত বনাম চিন সম্পর্কে আরও জানতে
-------------------------------------------------^^^^^-------------------------------------------------
১) চীনকে মোকাবেলায় ভারতের সামরিক প্রস্তুতি২) লাদাখ থেকে সেনা ছাউনি সরাল ভারত-চিন দু-পক্ষই
৩) চীন সীমান্তে মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর মোতায়েন করবে ভারত প্রতিবেশীর সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লী
No comments:
Post a Comment